রবিবার, ১১ জুলাই, ২০১০

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ এযাবত বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে যত সহায়তা পেয়েছে, তার মধ্যে এটাই সব চেয়ে বড় অঙ্কের সহায়তা-প্রস্তাব





ওয়ালিউর রহমান মিরাজ

বিবিসি বাংলা, ঢাকা
বাংলাদেশের জন্য আর্থিক সহায়তা রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধির প্রস্তাব করে নতুন একটি কান্ট্রি অ্যাসিস্ট্যান্স স্ট্র্যাটেজি বা সাহায্য কৌশল চূড়ান্ত করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক৻

ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাঙ্কের সদর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, আগামী চার বছরের জন্য তারা বাংলাদেশে উন্নয়ন কর্মসূচীতে ৬১০ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা দিতে চায়৻

বাংলাদেশ এযাবত বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে যত সহায়তা পেয়েছে, তার মধ্যে এটাই সব চেয়ে বড় অঙ্কের সহায়তা-প্রস্তাব৻ ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্ক বাংলাদেশে যে সাহায্য-কৌশল স্থির করেছিল তার তুলনায় এই সহায়তার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেশি৻

ঢাকায় বিশ্বব্যাঙ্কের কর্মকর্তারা বলছেন যে স্বাধীনতার পর এ যাবৎকালের মধ্যে বাংলাদেশকে দেয়া এটাই সবচেয়ে বড় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি। তবে এই অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতির সংস্কার করতে হবে বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন।

ঢাকায় বিশ্বব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক পরিচালক ডঃ জাহিদ হোসেন বলছেন যে দারিদ্রের মাত্রা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অথনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বব্যাঙ্কের নতুন এই সাহায্য সরকারকে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাঙ্ক বলছে, দারিদ্র বিমোচন করে বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যেই এই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে৻ প্রস্তাবিত এই সহায়তার সিংহভাগ খরচ করা হবে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে৻

বাংলাদেশের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক

এলেন গোল্ডস্টাইন, বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাঙ্কের আবাসিক প্রতিনিধি

৬১০ কোটি ডলারের বিপুল সহায়তার বেশির ভাগটাই বিশ্বব্যাঙ্ক সড়ক, সেতু ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে খরচ করতে আগ্রহী৻

যেমন, পদ্মা নদীর ওপর একটি মাল্টিপারপাস বা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করা বাংলাদেশে বর্তমান সরকারেরও অগ্রাধিকার৻ এই পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাঙ্কও তাদের সাহায্য কৌশলে ১২০ কোটি ডলার ধরে রেখেছে৻




অবকাঠামো ছাড়া সাহায্য কৌশলে গুরুত্ব পেয়েছে জ্বালানি ও সামাজিক খাতও৻ ডঃ জাহিদ হোসেন বলছেন যে দারিদ্র বিমোচন ছাড়াও সবাইকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার বিষয়টি সাহায্য কৌশলে গুরুত্ব পেয়েছে।

বাংলাদেশে এখন প্রায় চল্লিশ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন – ২০২১ সালের মধ্যে একে পনেরো শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে৻

এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বাংলাদেশে অন্তত আট শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার নিশ্চিত করতে হবে – বিশ্ব ব্যাঙ্কের নতুন সাহায্য কৌশলও ঠিক সেই লক্ষ্যেই কাজ করবে বলে বলা হচ্ছে৻

বিশ্বব্যাঙ্ক বলছে যে বাংলাদেশের জন্যে নতুন সাহায্য কৌশলটি তৈরীর আগে সরকার, অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থা এবং ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন স্বার্থ গোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে।

মূল লেখাঃ http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2010/07/100710_sgbdeshwb2.shtml

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন